সোহাগ পরিবহনের হেলপার সাব্বির শেখকে হত্যার দায়ে আসামি হাসান শেখকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময়ে আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল।
আরও পড়ুন: খুলনায় সোহাগ পরিবহনের ভেতর হেলপারকে কুপিয়ে হত্যা (ভিডিও)
আসামি হাসান শেখ সোনাডাঙ্গা থানাধীন গোবরচাকা মোল্লাবাড়ি এলাকার নুর জামালের ভাড়াটিয়া সাঈদ শেখের ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়,সাব্বির শেখ বাগেরহাট জেলার বাঘরগঞ্জ বাজার এলাকর রফিকুল ইসলামের ছেলে। সে সোহাগ পরিবহন ঢাকা মেট্রো ব ১৪-৭১৫৩ সিরিয়ালের হেলপার ছিল। ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা যাওয়ার জন্য দুপুর দেড়টার দিকে বাগেরহাট থেকে খুলনায় আসে। ওইদিন রাতে ড্রাইভার মানিক মোল্লার সাথে ঢাকায় চলে যায় সে। পরেরদিন বিকেলে ওই পরিবহনে করে খুলনায় ফিরে আসে। রাত ১২ দিকে খুলনা টাইগার গার্ডেনের সামনে ফাকা রাস্তায় গাড়ি পরিস্কার করে রাখার জন্য ড্রাইভার সাব্বিরকে গাড়িতে রেখে বাইরে চলে যান।
পরেরদিন ড্রাইভারের ওই গাড়ি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। ড্রাইভার দরজা খুলতে গিয়ে সাব্বির শেখের ক্ষত-বিক্ষত দেহ পরিবহনের ভেতর পড়ে দেখতে পেয়ে কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
হত্যার কারণ হিসেবে আদালত সূত্র জানা যায়, ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে গাড়ি পরিস্কার করে সাব্বির শেখ রিক্সা চালক হাসান শেখের কাছে গাজা কেনার জন্য অনুরোধ করে। গাজার খবর দিতে না পারায় ১৫০ টাকা চুক্তিতে মদ ক্রয়ের জন্য নগরীর বার্মাশীল মোড়ে যায় সাব্বির। সেখান থেকে মদ কিনে হেলপার হাসান শেখের রিক্সায় করে টাইগার গার্ডেনের সামনে ফিরে আসে। রিক্সাচালককে মদ খেতে না দিয়ে বোতল নিয়ে সাব্বির গাড়ির ভেতরে চলে যায়। রিক্সাচালক রিক্সাভাড়া চাইলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালি করতে থাকে সাব্বির। পরে রাগ হয়ে রিক্সার সিটের নীচ থেকে ধারালো ছুরি বের করে সাব্বিরের গলা ও ডানহাতের কব্জির ওপরে আঘাত করে। তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আসামি হাসান শেখ গাড়ির একটি জানালা খুলে পালিয়ে যায়।
ছেলে হত্যার জন্য বাবা রফিকুল ইসলাম সোনাডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় হাসান শেখকে গোবরচাকা এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর রিক্সাচালক হত্যাকান্ডের বিবরণ দিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনাডাঙ্গা থানার এসআই সুকান্ত দাশ একই বছরের ২৫ এপ্রিল হাসানকে আসামি করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
খুলনা গেজেট/এএজে